সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর এক বছর পার হয়ে গিয়েছে। লাটভিয়ার ব্রিটিশ অ্যাম্বাসির দরজা ঠেলে ভিতরে ঢুকলো এক ভদ্রলোক। তার হাতে একটা কালো সুটকেস। সুটকেসের ভিতরে যদি কেউ দেখতে চায়, তবে দেখতে পাবে একগাদা নোংরা জাঙ্গিয়া! কিন্তু ওর মধ্যেই রয়েছে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের গোয়েন্দা সংস্থা কেজিবি’র টপ সিক্রেট ডকুমেন্টগুলো, যেগুলো সযত্নে স্যুটকেসের গোপন কম্পার্টমেন্টে লুকিয়ে রেখেছেন ভদ্রলোক, কেজিবি’র সাবেক অফিসার ভাসিলি মিত্রোখিন।
কেজিবি’র প্রধান নথি সংরক্ষক হিসেবে মিত্রোখিনের যেকোনো জায়গাতেই যাওয়ার সুযোগ ছিল, সুযোগ ছিল যেকোনো ডকুমেন্ট নিয়ে নাড়াচাড়া করার। এমনকি যখন মস্কোর লুবিয়াংকা থেকে ইয়াসেনেভোতে প্রধান দপ্তর স্থানান্তর করা হলো, কেজিবি’র সব ডকুমেন্ট আনা-নেওয়া তাকেই করতে হয়েছিল, আর তা করতে সময় লেগেছিল ১২ বছর! এই ১২ বছরে কেজিবির গুরুত্বপূর্ণ দলিলগুলো নিজ হাতে লিখে নকল করেছেন, জুতোর মধ্যে করে বাড়িতে নিয়ে গিয়েছেন আর সেগুলো রেখে দিয়েছেন বাড়ির মেঝের নিচে প্লাস্টার করে।
লাটভিয়ার অ্যাম্বাসিতে ঢোকার দিন থেকে শুরু করে ব্রিটিশ গোয়েন্দা সংস্থা ’এমআই৬’-এর কাছে পরবর্তীতে ২০ হাজারেরও বেশি পৃষ্ঠার গোপন ডকুমেন্ট পাচার করেছেন মিত্রোখিন, উঠে এসেছে এক সময়ের বিশ্বের অন্যতম শক্তিধর রাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় আর গোপন সংগঠনের অন্ধকার ইতিহাস। মিত্রোখিন খুব ভালো করেই জানতেন তিনি কত বড় ঝুঁকি নিতে যাচ্ছেন। একবার যদি তিনি ধরা পড়ে যেতেন, তাহলে তাকে লুবিয়াংকার মধ্যেই হারিয়ে যেতে হতো। বিশ্বাসঘাতকদের জন্য কেজিবির ওষুধ খুবই কড়া, মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি তাকে ফলকহীন কবরে উল্টো করে শুইয়ে গোর দেওয়া হতো, এমনকি পরিবারও জানতো না তার শেষ পরিণতি কী হয়েছিলো।
চেকার ছ্যাঁকা
স্নায়ুযুদ্ধের সময় বিখ্যাত হওয়া কেজিবি’র মূল খুঁজতে হলে চলে যেতে হবে সেই বলশেভিক বিপ্লবের সময়। ১৯১৭ সালের ২০ ডিসেম্বর গঠন করা হয় নিরাপত্তারক্ষী বাহিনী, চেকা। পোল্যান্ডে জন্ম নেওয়া অভিজাত ফেলিক্স জেরঝিনস্কি ছিলেন এ বাহিনীর প্রধান, যিনি পরিচিত ছিলেন ‘আয়রন ফেলিক্স’ হিসেবে। দিন যতই গড়াতে থাকলো সোভিয়েত শাসকরা বুঝতে পারলেন দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থার জন্য একটি সদা-জাগ্রত গোয়েন্দা দল প্রয়োজন। তবে এর যতটা না প্রয়োজন দেশের বাইরের শত্রুর জন্য, তার চেয়ে বেশি প্রয়োজন দেশের অভ্যন্তরীণ শত্রুদের বিপক্ষে।
সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যেই তখনো কয়েক লক্ষ মানুষ ঘোরাফেরা করছে যারা এ সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থা পছন্দ করে না। সোভিয়েত শাসকদের ভাষায় এরা হলেন ‘সাম্রাজ্যবাদী এজেন্ট’, যারা সোভিয়েত শাসনব্যবস্থার জন্য হুমকি। চেকা বাহিনী এ সময় বেশ দক্ষতার সাথেই এ অবস্থা সামলিয়েছিলো, তবে একটু ভিন্ন উপায়ে।
সোভিয়েত বিরোধী কাউকে পেলেই নির্বিচারে গ্রেফতার করা হতো, কোনো ধরনের বিচার ছাড়াই তাকে যেতে হতো বীভৎস সব নির্যাতনের মধ্য দিয়ে। এতসব ঘটনার পরেও ফেলিক্স একজন চেকা অফিসারের বৈশিষ্ট্য হিসেবে উল্লেখ করতেন এমন একজন মানুষ, যার উষ্ণ হৃদয় এবং ঠাণ্ডা মাথার পাশাপাশি পরিষ্কার হাতও রয়েছে! কেজিবির ট্রেনিংয়ে এই মূলমন্ত্রই শেখানো হতো, আর অফিসাররা গর্বভরে নিজেদের পরিচয় দিতো একজন ‘চেকিস্ট’ হিসেবে। চেকা বাহিনী প্রতিষ্ঠিত হওয়ার দিনের সম্মানে প্রতি মাসের ২০ তারিখে চেকাদের বেতন পরিশোধ করা হতো, এবং রাশিয়ায় এখনো সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের জন্য ২০ ডিসেম্বর বিশেষ ছুটির দিন হিসেবে পালিত হয়।
ফেলিক্সই পরবর্তীতে কেজিবি’র ঢাল এবং তলোয়ারের প্রতীক ডিজাইন করেন। ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভাঙনের আগ পর্যন্ত কেজিবি’র প্রধান দপ্তরের সামনে একজন চেকা অফিসারের লোহার মূর্তি ছিল। চেকার মতো কেজিবির লক্ষ্যও জনগণকে রক্ষা নয়, বরং ছিল রাষ্ট্রকে রক্ষা করার কাজে ব্যস্ত। দেশের ভিতরে বা বাইরে, সোভিয়েত ইউনিয়নের আদর্শের বিরোধী যেকোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাই ছিল কেজিবির মূল কাজ। এর আগেও সাতবার নাম পরিবর্তন করার পর অবশেষে ১৯৫৪ সালের মার্চ মাসে সোভিয়েত ইন্টেলিজেন্স সার্ভিসকে নামকরণ করা হয় ‘কেজিবি’, যার অর্থ ‘কমিটি ফর স্টেট সিকিউরিটি’।
স্তালিন তার গোয়েন্দা বাহিনীকে ব্যবহার করেছিলেন সম্পূর্ণ নিজের প্রতিপক্ষকে গুড়িয়ে দেওয়ার জন্য। ১৯৩৭ সালের বলশেভিক বিপ্লব উদযাপনের এক অনুষ্ঠানে স্তালিন ঘোষণা করেছিলেন, “আমরা কোনোরকম দয়া দেখানো ছাড়াই তাকে ধ্বংস করে দেবো যার কোনো কাজ, এমনকি চিন্তাও এই সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়ায়।” লেনিনের একটি বিখ্যাত উক্তি হলো, “বিশ্বাস ভালো, নিয়ন্ত্রণ করা আরো ভালো।” আর সোভিয়েত গোয়েন্দারা ঠিক তা-ই করেছিলো, পুরো রাষ্ট্রজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে দিয়ে শত্রুদেরকে নিয়ন্ত্রণে রাখতো তারা।
ক্রুশ্চেভের আগমন
১৯৫৩ সালে স্তালিনের মৃত্যুর পর সোভিয়েত ইউনিয়নের নেতা হিসেবে আবির্ভূত হন নিকিতা ক্রুশ্চেভ। রাজনীতির মারপ্যাঁচ কাজে লাগিয়ে ক্রুশ্চেভ সোভিয়েত গোয়েন্দাদের ক্ষমতা কিছুটা কমিয়ে দেন, সাথে বলশেভিক আর স্তালিন যুগের আগ্রাসী মনোভাবও কিছুটা কমিয়ে আনেন। ১৯৫৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় কেজিবি, সাথে চলে আসে ক্রুশ্চেভের মুক্তি অভিযান। রাজনৈতিক বন্দীদের মুক্তি দেওয়া হয়, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বাড়ানোর জন্য নতুন উদ্যোগ নেওয়া শুরু হয়। এমনকি ১৯৫৬ সালের পার্টি কংগ্রেস মিটিংয়ে স্তালিনের সমালোচনাও করেন তিনি।
১৯৫৪ সালে সদ্য প্রতিষ্ঠিত কেজিবির প্রথম চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পান আইভান সেরভ, যিনি ইউক্রেন আর বাল্টিকে অভিযান চালিয়েছেন, পূর্ব জার্মানির গোপন পুলিশ সংস্থা ‘স্তাসি’ গঠনে ভূমিকা রেখেছেন। কোনো ব্যক্তিকে না মেরে তার দেহের সবকয়টি হাড় ভেঙে ফেলার দক্ষতা দম্ভভরে প্রচার করে বেড়ানো সেরভকে পশ্চিমারা আখ্যা দিয়েছিলো কসাই হিসেবে, আর তা ক্রুশ্চেভের নব্য সোভিয়েত গঠনে ভালোই প্রভাব ফেলছিলো।
বিশ্বজুড়ে সোভিয়েত ইউনিয়নের ভালো ইমেজ তৈরি করার জন্য ক্রুশ্চেভ গুলাগ থেকে কয়েক লক্ষ বন্দীকে ছেড়ে দিলেন, পরিবর্তন করলেন নিরাপত্তা ব্যবস্থাও। তবে কেজিবির কাজ কমে যায়নি। স্থল আর জল সীমান্ত রক্ষার কাজে কেজিবির আলাদা শাখা খোলা হলো ‘বর্ডার গার্ডস ডিরেক্টোরেট’ নামে, রাষ্ট্রীয় প্রধানদের জন্য গঠন করা হলো দেহরক্ষী বাহিনী ‘নাইন্থ ডিরেক্টোরেট’, টেলিফোন আর রেডিও অপারেটরদের জন্য খোলা হলো বিশেষ ‘সিক্সটিন্থ ডিরেক্টরেট’ শাখা। সেরভকে সরিয়ে আলেকজান্ডার শেলেপিনকে প্রধান বানানোর পর নৃশংসতা ছেড়ে আরো উন্নত গোয়েন্দা সংস্থায় রূপান্তরিত হলো কেজিবি। শেলেপিনের ৩ বছরের দায়িত্বরত অবস্থায় বৃদ্ধ রক্ষীদের সরিয়ে দিয়ে প্রচুর পরিমাণে বিশ্ববিদ্যালয় গ্র্যাজুয়েটদেরকে নিয়োগ দেওয়া হলো কেজিবি অফিসার হিসেবে।
মানসিক বিকৃতি
স্তালিন-পরবর্তী ক্রুশ্চেভের মানবিক যুগে কেজিবি অফিসাররা আর খোলামেলাভাবে বন্দীদের উপর নির্যাতন চালাতে পারতো না, এমনকি জেরা করার সময়ও যতটা সম্ভব কম যন্ত্রণা দিয়ে কহা আদায় করা যায়, তার নির্দেশ দেওয়া হলো। এদিকে এর ফলে অন্যান্য ব্যবস্থাগুলোও খুব একটা কার্যকর হচ্ছিলো না।
এই সমস্যার খুব সাধারণ একটা সমাধান বের করা হলো। সোভিয়েতের বিরোধিতাকারী যে কাউকে নিয়ে যাওয়া হতো পাগলা গারদে, কারণ এক সাইক্রিয়াটিস্টের মতে, যে সোভিয়েত ইউনিয়নের বিরোধিতা করে তার নিশ্চয় মানসিক সমস্যা রয়েছে আর সে ‘সামান্য স্কিৎজোফ্রেনিয়া’তে ভুগছে! ফ্রান্সিস হুইন এ ব্যবস্থাকে ব্যঙ্গ করে মন্তব্য করেছিলেন, “একটি সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রে বাস করে তারই বিরোধিতা করা নিশ্চয়ই পাগলের লক্ষণ!” এই তথাকথিত স্কিৎজোফ্রেনিয়া রোগীদের সবকিছু বাজেয়াপ্ত করে পাঠিয়ে দেওয়া হতো মানসিক রোগীদের হাসপাতালে, যা পরিচিত ছিল পিসিকুশকা নামে। তৎকালীন কেজিবি চেয়ারম্যান ইউরি আন্দ্রোপোভের হাত ধরে ১৯৬৯ সালে এই নিয়ম চালু শুরু হয়। এভাবে কয়েক হাজার বন্দীকে মানসিক হাসপাতালে বন্দী করে রাখা হতো কয়েক মাস, এমনকি বছরও। নোবেল বিজয়ী আলেকজান্ডার সোলঝেনিটসিন একে অভিহিত করেছিলেন ‘আত্মিক মৃত্যু’ হিসেবে। এর বিরোধিতা করলে অভিযুক্তের নামের পাশে ‘পাগলামির মাত্রা আরো বেশি’ লিখে দেওয়া হতো, অন্যদিকে বিভিন্ন ধরনের মাদকদ্রব্য আর ইলেকট্রিক শক ব্যবহার করা হতো ‘ট্রিটমেন্ট’ হিসেবে।
ইউরি আন্দ্রোপোভ এবং ‘দ্য হাঙ্গেরিয়ান কমপ্লেক্স’
১৯৫৬ সালে হাঙ্গেরির অভ্যুত্থানের সময় সোভিয়েত কূটনীতিক হিসেবে সেখানে দায়িত্বরত ছিলেন ভবিষ্যৎ কেজিবি প্রধান ইউরি আন্দ্রোপোভ। সর্বময় ক্ষমতাসম্পন্ন একটি সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র কীভাবে মুহূর্তের মধ্যেই এক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে পতন ঘটলো তা সারাজীবন তাড়িয়ে নিয়ে বেড়াতে থাকলো তাকে। এবং ১৫ বছর ধরে কেজিবির প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করা আন্দ্রোপোভ যখন ১৯৮২ সালে লিওনিড ব্রেঝনেভের উত্তরসূরি হিসেবে সোভিয়েত রাষ্ট্রপ্রধানের দায়িত্ব পেলেন, তখন তিনি খুব ভালোভাবেই টের পেয়েছিলেন রাশিয়ার বাইরের সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রগুলোর ক্ষেত্রেও কেজিবির কার্যক্রম চালানো প্রয়োজন। নাহলে হাঙ্গেরির দেখাদেখি অন্যান্য দেশগুলোও অভ্যুত্থানের মাধ্যমে হাতছাড়া হয়ে যেতে পারে। আন্দ্রোপোভ যুগে কেজিবি ব্যাপক পরিমাণে বিদেশের মাটিতে অভিযান চালাতে থাকে, হোক সেটা সোভিয়েত শাসনাধীন কিংবা অন্য পুঁজিবাদী রাষ্ট্র। রাজনৈতিক গুপ্তহত্যা, গুজব ছড়ানো কিংবা বিভিন্ন সন্ত্রাসী দলকে অর্থায়ন ছিল তাদের ‘সক্রিয় পদক্ষেপ’।
তিক্ত পরিণতি
পিছন থেকে ছুরি মারা কিংবা বিশ্বাসঘাতকতা সোভিয়েত ইউনিয়নের রাজনৈতিক ময়দানেও খুব একটা অপরিচিত ছিল না। রাশিয়ান সিকিউরিটি সার্ভিস আর পোলিটবুরোর সদস্যরা সবসময়ই একে অপরের পিছনে লেগে থাকতো, আর রাজনৈতিক পরিবর্তন ঘটলেই হতে হতো ষড়যন্ত্রের শিকার।
১৯৫৩ সালে জোসেফ স্তালিনের মৃত্যুর পর, নিরাপত্তা প্রধান লাভরেন্তি বেরিয়াই ছিল মূল উত্তরসূরি, কিন্তু তাকে সরিয়ে দিয়ে তার জায়গা দখল করে নিলো ক্রুশ্চেভ। বেরিয়ার পরিণতি হলো তার পূর্বসূরি ইয়াগোদা আর ইয়েঝোভের মতোই। ইউরি আন্দ্রোপোভের আগপর্যন্ত অনেক কেজিবি চেয়ারম্যানকেই সরিয়ে দেওয়া হয়েছে ষড়যন্ত্রের অভিযোগে, হোক সেটা সত্য কিংবা মিথ্যা।
১৯৯১ সালে মিখাইল গর্বাচেভের সরকারের বিরুদ্ধে যে অভ্যুত্থান শুরু হয়েছিল, তার নেতৃত্বে ছিলেন স্বয়ং কেজিবি প্রধান ভ্লাদিমির ক্রুশকোভ। মস্কোর বাথহাউজকে ঘিরে তার পরিকল্পনার পুরোটাই মাঠে মারা গেল। ১৯৯১ সালের ক্রিসমাসের দিন শেষবারের মতো ক্রেমলিনে ওড়ানো হলো সোভিয়েতের কাস্তে-লাঙলওয়ালা লাল পতাকা। সোভিয়েত ইউনিয়নের এই টানাপোড়েনের সময় কেজিবির অনেকেই সদস্যই ভেবেছিল শাসকদের পক্ষে মাঠে নামবে। কিন্তু শেষমেশ ব্যর্থ অভ্যুত্থানের সাথে জড়িত থাকায় ১৯৯১ সালের ৬ ডিসেম্বর কেজিবিকে ভেঙে দেওয়া হলো। তার বদলে এলো নতুন দুটো সংগঠন ‘এফএসবি (সিক্রেট পুলিশ এজেন্সি)’ এবং ‘এসভিআর (এস্পায়োনেজ এজেন্সি)’।
নব্বইয়ের দশকে মাঝামাঝি সময়ে রাশিয়ার সাধারণ সমাজে ‘সিলোভিক’ নামক একটি নতুন শব্দের আগমন ঘটলো। এর অর্থ হলো সদ্য রাজনীতিতে পদার্পণ করা সাবেক সামরিক এবং গোয়েন্দা সদস্য। এই সিলোভিকরাই এখন ক্রেমলিনের অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করছে, মন্ত্রিসভার অনেকেই ছিলেন সাবেক কেজিবি সদস্য। কেজিবি এখনো হারিয়ে যায়নি, আধুনিক রাশিয়ার উপর এখনো ছায়া হয়ে রয়েছে কেজিবির ঢাল আর তলোয়ার।