প্রায়শই তারকাদের সমাজের চল নির্ধারণকারীর উপমা দেওয়া হয়ে থাকে। সেটা হতে পারে তাদের জীবনযাত্রার ধরন, আচার-ব্যবহার কিংবা সামাজিক দর্শন। আর সেগুলো অনেকাংশেই নির্ভর করে তাদের আর্থিক অবস্থার উপর। এর উপর নির্ভর করেই সাধারণ মানুষ তারকাদের আদর্শ ভাবতে শুরু করে, বিভিন্নভাবে তাদের পদচিহ্ন অনুসরণ করতে শুরু করে।
এই সেলেব্রিটি কালচার থেকে দূরে থাকাটা কখনো কখনো শুধু দুঃসাধ্যই নয়, ক্ষেত্রবিশেষে অসম্ভবও বলা যায়। তারকারা কখন কী করেন, কোথায় যান, কী পরিধান করেন, কী ভাবেন, এমনকি যা করেন না সেগুলোও ভক্তদের নজর এড়াতে পারে না। আর এই প্রভাবটা এতটাই বেশি যে কখনও কখনও সেটা মৃত্যুর পরও পিছু ছাড়ে না। আর আমাদের আজকের আলোচনা মৃত তারকাদের নিয়ে। তবে তাদের জীবনযাত্রা নয়, মৃত্যুর পরেও তারা গেল বছর (২০১৭) কত আয় করলেন তারই একটা হিসেব দিতে আমাদের আজকের লেখার অবতারণা।
১৩. বেটি পেজ
বেটি পেজ মারা গেছেন সেই ২০০৮ সালের ১১ ডিসেম্বর। তার যৌবনে, বিশেষ করে পঞ্চাশের দশকে প্লেবয় বা অন্যান্য বিনোদন পত্রিকার আবেদনময়ী পোস্টার তারকা হিসেবে ভালোই সুনাম অর্জন করেন তিনি। তার ছবিগুলো তৎকালীন প্রজন্মের কাছে ছিল বেশ জনপ্রিয়। প্লেবয়ের প্রতিষ্ঠাতা হিউ হ্যাফনার পেজ সম্পর্কে বলেছিলেন, “আমি মনে করে বেটি একজন অসাধারণ নারী। পপ সংস্কৃতির জন্য সে প্রতিমাস্বরূপ। তার মধ্যকার আবেদন, ফ্যাশনজ্ঞান আমাদের সমাজের উপর একটি অসাধারণ প্রভাব বিস্তার করেছিল”।
সত্তরের দশকের শেষের দিকে তিনি মডেলিং ছেড়ে দিলেও, ততদিনে তিনি পরিণত হয়েছেন পিন-আপ কিংবদন্তীতে। বিশেষ করে তখনকার রমণীরা বেটীর ব্যবহৃত ব্যাংগস, তার ট্যাটু এবং তার স্টাইলে পোশাক পরতে শুরু করেন। তবে সেটা ছিল মাত্র শুরু। আজও অনেকে এই আবেদনময়ী পোস্টার কিংবদন্তীর চমৎকার নিজস্ব স্টাইলের পোশাক-আশাক, অন্তর্বাস ও হাতব্যাগ ব্যবহার করছেন। এমনকি নববধূর পোশাকেও সেগুলো বহাল তবিয়তে ব্যবহৃত হচ্ছে। আর সেখান থেকেই আয় হয়েছে প্রায় ৭.৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
১২. এলিজাবেথ টেইলর
হলিউডের মূলধারার স্টুডিও সিস্টেম থেকে উদিত শেষ তারকাদের মধ্যে অন্যতম একজন হলেন এলিজাবেথ টেইলর। তাছাড়া হলিউডের সর্বকালের সেরা অভিনেত্রীদের তালিকা করলে নিঃসন্দেহে সেই তালিকার প্রথমদিকেই অবস্থান করবেন দু’বার অস্কার জেতা এই অভিনেত্রী। চলচ্চিত্রে তার এই অবদানের জন্য ২০০০ সনের দিকে, যুক্তরাজ্যের রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ, তাকে পুরুষ নাইটের সমতুল্য ‘ডেইম’ উপাধিতে ভূষিত করেন। তবে আশির দশকে তিনি নিজেকে সিনেমা থেকে গুটিয়ে নিয়ে নিয়মিত টেলিভিশন নাটকে অভিনয় করতে শুরু করেন। এবং এর পরের দশকেই তিনি প্রথম তারকা হিসেবে নিজস্ব সুগন্ধির সংগ্রহশালার চালু করেন।
এলিজাবেথ আর্ডেন ইনকর্পোরেটেডের সাথে সম্মিলিতভাবে ১৯৮৭ সালে প্যাশন ও ১৯৯১ হোয়াইট ডায়মন্ড নামের দুটি পারফিউম বাজারে আসে। তার ব্যক্তিগত তত্ত্বাবধায়নে তার নামে মোট এগারটি পারফিউম উৎপাদন ও বাজারজাত করা হয়। এই সুগন্ধি সংগ্রহশালার মাধ্যমে উপার্জিত অর্থের পরিমাণ ছিল, তার অভিনয় জীবনে উপার্জিত অর্থের চেয়েও বেশি। ক্যাথি আয়ারল্যান্ডের পাশাপাশি জ্যাক ও মন্টি আবরামভের সহযোগিতায় ২০০৫ সালে তিনি একটি গয়না কোম্পানিও চালু করেন। তার এই সুগন্ধি সংগ্রহশালা ও গয়না কোম্পানিই তার উপার্জনকে এখনও চালু রেখেছে। আর গত বছর সেখান থেকে আয় হয়েছে প্রায় ৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
১১. ডেভিড বাউই
তিনি হলেন পৃথিবীর সর্বোচ্চ-বিক্রিত মিউজিক এলবামের শিল্পী। গত পাঁচ দশক ধরে সঙ্গীতাঙ্গনের একটি জনপ্রিয় স্থান দখল করে রাখার পর, ২০১৬ সালের ১০ জানুয়ারি পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে পরপারে চলে গেছেন ডেভিড বাউই। জীবদ্দশাতেই তার রেকর্ডকৃত অ্যালবামগুলোর আনুমানিক ১৪০ মিলিয়ন কপি বিক্রি হয় সারা বিশ্বব্যাপী। মৃত্যুর দু’দিন আগেও তার ৬৯তম জন্মদিনে মুক্তি পায় তার শেষ অ্যালবাম ব্ল্যাকস্টার। মুক্তির প্রথম সপ্তাহে, শুধুমাত্র যুক্তরাজ্যেই বিক্রি হয় অ্যালবামটির ১ লক্ষ ৪৬ হাজার কপি এবং যুক্তরাষ্ট্রে ১ লক্ষ ৮১ হাজার কপিরও বেশি। এছাড়াও এটি ছিল অনলাইনে সর্বাধিক ডাউনলোডকৃত অ্যালবামগুলোর একটি।
সেই ষাটের দশক থেকেই তার উদ্ভাবনী কাজের জন্য, বাউই সমালোচকমহল এবং অন্যান্য সঙ্গীতশিল্পীদের দ্বারাও ছিলেন প্রশংসিত। এবং তার ৯.৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার উপার্জনই বলে দেয় তার মৃত্যুর পর কী পরিমাণে তার গানের চাহিদা বেড়েছে!
১০. আলবার্ট আইনস্টাইন
নামটি পড়ে অবাক হয়েছেন নিশ্চয়ই? আইনস্টাইন মারা গেছেন সেই ১৯৫৫ সালে, তিনি কি করে এখনও ধনী সেলেব্রিটির আসন দখল করে রেখেছেন। জার্মান বংশোদ্ভূত এই তাত্ত্বিক পদার্থবিদ, আধুনিক পদার্থবিজ্ঞানের দুটি স্তম্ভের একটি (আপেক্ষিক তত্ত্ব) উন্নয়নের মাধ্যমে ব্যাপক পরিচিত পেয়েছেন সারাবিশ্বে।
আইনস্টাইনের যেহেতু কোনো জীবিত উত্তরাধিকারী নেই, তাই এই পদার্থবিদ মৃত্যুর পূর্বে, তার নাম ও ছবির স্বত্ব ধার দিয়ে গিয়েছিলেন ফোরিয়ার সিস্টেম নামের এক ইসরায়েলি টেক কোম্পানিকে। এছাড়াও তিনি তার সকল ব্যক্তিগত নথিপত্র, মেধা সম্পত্তির এবং তার ছবি ব্যবহারের অধিকার জেরুজালেমের এক হিব্রু বিশ্ববিদ্যালয়কে দান করে গেছেন। সেই বিশ্ববিদ্যালয় গ্রিনলাইট নামের এক কোম্পানিকে দায়িত্ব দিয়েছে এসব কিছু পরিচালনা করার জন্যে। প্রতিবছর আইনস্টাইনের ছবিযুক্ত ক্যালেন্ডার, মগ, জিগস পাজল, অ্যাকশন পরিসংখ্যান এবং নেসলের তৈরি জাপানি ব্র্যান্ডের কফি থেকে আয় হচ্ছে বিরাট অংকের টাকা। তবে আয়ের সবচেয়ে বড় উৎস হচ্ছে ডিজনির বেবি আইনস্টাইন পণ্য; এর মধ্যে রয়েছে শিক্ষামূলক ডিভিডি, বই ও বাচ্চাদের খেলনা। এসব মিলিয়ে প্রতিবছর আয় হয় কয়েক মিলিয়ন ডলারের মতো। আর গত বছর সেই টাকার অংক ছিল ১০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
৯. জন লেনন
ব্রিটিশ ব্যান্ডদল দ্য বিটলসের নাম শোনেনি এমন মানুষ পৃথিবীতে কমই আছেন। ষাটের দশকে শুরু হওয়া বিখ্যাত এই ব্যান্ড মাত্র ১০ বছরেই যে পরিমাণ বাণিজ্যিক সফলতা অর্জন করেছিল তা বলার অপেক্ষা রাখেনা। আর এই বিটলসের প্রতিষ্ঠাতা হলেন আরেক কিংবদন্তী জন লেনন, রোলিং স্টোন যাকে দিয়েছিল সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ গায়কদের পাঁচ নম্বর স্থানটি।
তবে দুঃখজনক হলেও সত্যি যে, ১৯৮০ সালের দিকে এক বন্দুকধারীর হাতে মাত্র ৪০ বছর বয়সে অকালে প্রাণ হারাতে হয়েছিল লেননকে। হয়তো তার কফিনের ডালা খুললে এখনও দেখা যাবে, ভক্তদের একরাশ ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে শান্তিতে শয়ান আছেন তিনি। তবে লাস ভেগাসের সেই সার্ক দু সলিল শো আজও বাঁচিয়ে রেখেছে দ্য বিটলস আর জন লেননকে। সেখান থেকেই জন লেননের নামে ২০১৭ সালে জমা হয়েছে ১২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
৮. ড. সুস
তার আসল নাম থিওডর সুস গিসেল। তিনি ছিলেন একাধারে একজন নামকরা লেখক, রাজনৈতিক কার্টুনিস্ট, কবি, অ্যানিম্যাটর, বই প্রকাশক এবং চিত্রশিল্পী। বিশেষ করে ড. সুস ছদ্মনামে শিশু-কিশোরদের জন্যে লেখা বইয়ের মাধ্যমে তিনি ব্যাপক সুখ্যাতি অর্জন করেছিলেন। সেই বইগুলোর প্রায় ৬০০ মিলিয়ন কপি বিক্রি হয়েছে বিশ্বব্যাপী।
অরাল ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ৯১ বছর বয়সী গিসেল মৃত্যুবরণ করেছেন সেই ১৯৯১ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর। কিন্তু তা-ও তিনি গত বছর আয় করছেন ১৬ মিলিয়ন ডলার। তার বইগুলোর লক্ষ লক্ষ কপি আজও বিক্রি হচ্ছে, আর সেখান থেকেই তার নামে জমা পড়ছে বিরাট অংকের টাকা।
৭. প্রিন্স
প্রিন্সের কথা মনে আছে নিশ্চয়। প্রিন্স রজার্স নেলসন, একজন গায়ক, গীতিকার, অভিনেতা আর পরিচালক! কত রূপেই না তিনি পরিচিত ছিলেন দর্শকদের মাঝে। এছাড়াও কয়েক ধরনের বাদ্যযন্ত্র তিনি বাজাতে পারতেন বেশ পারদর্শীতার সাথে। সংগীতের এই বরপুত্রের বিভিন্ন অ্যালবামের প্রায় ১০০ মিলিয়নের মতো কপি রেকর্ড বিক্রি হয়েছে বিশ্বজুড়ে। এই অনবদ্য অর্জনের স্বীকৃতিস্বরূপ তাকে পৃথিবীর সর্বকালের সেরা গায়কদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
জীবিত অবস্থায় মিলিয়ন ডলার উপার্জন করা এই গায়ক মৃত্যুর পরেও উপার্জন করে চলেছেন। তার স্বত্ব বিক্রয় ও পুরাতন অ্যালবাম বিক্রির মাধ্যমে আজও ভক্তদের মনের গহীনে বেঁচে আছেন এই কিংবদন্তী। এখনও বিক্রি হচ্ছে তার অ্যালবামগুলোর অসংখ্য কপি। আর তার প্রোডাকশন হাউস লুফে নিচ্ছে মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার। ফলস্বরূপ, গেল বছর তার নামে জমা হয়েছে ১৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
৬. থমাস পেটি
হার্টব্রেকার দলের খ্যাতনামা গায়ক থমাস পেটিও রয়েছেন এই তালিকায়। গান গাওয়া ও রচনায় সমান দক্ষ এই প্রতিভাবান গায়কের মৃত্যু হয় ২০১৭ সালের ৩ অক্টোবর। অ্যালবাম ছাড়াও তার রয়েছে বেশ ক’টি একক হিট গান। তার প্রায় ৮০ মিলিয়নের চেয়ে বেশি রেকর্ড বিক্রি হয়েছে বিশ্বজুড়ে। সেরা রক গায়ক হিসেবে রক এন্ড রোল হল অফ ফেমেও নাম আছে তার।
তার ব্যান্ড দল আজও প্রতি রাতে গড়ে ১ মিলিয়ন ডলারের মতো আয় করে যাচ্ছে বিভিন্ন রেকর্ডের মাধ্যমে। গত বছর সেখান থেকে থমাসের আয় হয়েছে ২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
৫. বব মার্লে
বব মার্লে মিশে আছেন মানুষের আবেগের মাঝে। তা নয়তো কী! ১৯৪৫ সনে জন্ম নেয়া এই জামাইকান মানুষটি মাত্র ১৮ বছর বয়সে জায়গা করে নিয়েছিলেন সঙ্গীতাঙ্গনের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে। অল্প বয়সে গঠন করেছিলেন দ্য ওয়েইলার্স ব্যান্ডদল। তারপর ১৯৭৭ সালে বের হয় তার একক অ্যালবাম এক্সোডাস। মুক্তির ৫৬ সপ্তাহ ধরে ব্রিটিশ টপ চার্টে থাকা সেই অ্যালবামটির বিক্রি হয়েছিল প্রায় ৭০ মিলিয়ন কপি। এর কিছুদিনের মধ্যেই অ্যাক্রাল ল্যান্সিগ্রিনস মেলানোমায় আক্রান্ত হয়ে পড়েন বব, সাথে দেখায় স্কিন ক্যান্সার।
শেষমেশ ১৯৮১ সালে মাত্র ৩৬ বছর বয়সে পরলোক গমন করেন আন্তর্জাতিক ও সাংস্কৃতিক আইকন বব মারলে। তবে মৃত্যুর এত বছর পরেও আজও মানুষ তাকে স্মরণ রেখেছে। আজও বিক্রি হচ্ছে তার রেকর্ডস, অডিও পণ্য এবং চালু আছে মার্লে বেভারেজ কোম্পানি; যেখান থেকে গত বছর আয় হয়েছে ২৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
৪. এলভিস প্রিসলি
এলভিস প্রিসলির কথা মনে আছে? যিনি একাধারে গায়ক, সুরকার এবং অভিনেতা। যাকে ডাকা হয় ‘কিং অফ রক এন্ড রল’ নামে। এছাড়াও স্মরণ করা হয় বিংশ শতাব্দীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক আদর্শ ও প্রভাবশালী সঙ্গীতজ্ঞদের একজন হিসেবে।
সংগীতাঙ্গনে ব্যাপক ডাকনাম রয়েছে তার। তার রেকর্ডগুলোর প্রায় ৬০০ মিলিয়ন সংখ্যা বিক্রি হয়েছে বিশ্বব্যাপী। মাত্র ৩৬ বছর বয়সে তিনি জিতেছেন তিনটি গ্র্যামি অ্যাওয়ার্ড এবং গ্র্যামি লাইফ টাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড। তারপর ১৯৭৭ সালের আগস্ট মাসে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান মাত্র ৪৫ বছর বয়সকালে। তার নামে রয়েছে এলভিস প্রিসলি মেমফিস এন্টারটেইনমেন্ট কমপ্লেক্স এবং একটি সদ্য খোলা হোটেল। যেগুলোর বাৎসরিক আয় ৩৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
৩. চার্লস শুলজ
শুলজ ছিলেন সুপরিচিত একজন কার্টুনিস্ট। বিশেষ করে পিনাটস কার্টুন সিরিজের নির্মাতা হিসেবে তার রয়েছে ব্যাপক সুনাম। তাকে গণ্য করা হয় সর্বকালের প্রভাবশালী কার্টুনিস্টদের একজন হিসেবে। শুলজ মারা গেছেন ২০০০ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি।
সম্প্রতি মার্কিন ইনস্যুরেন্স কোম্পানি মেটলাইফ তাদের বিজ্ঞাপন প্রচারণা থেকে বাদ দিয়েছে শুলজের স্নুপি ও চার্লি ব্রাউন চরিত্র দুটিকে। তবে কার্টুনিস্টের সাথে ২০১৯ সাল পর্যন্ত চুক্তি থাকার কারণে, এখনও তার নামে জমা হচ্ছে বেশ বড় অঙ্কের টাকা। বিগত বছরে সেই পরিমাণ ছিল ৩৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
২. আর্নল্ড পালমার
গলফের মাঠগুলোকে যদি সাম্রাজ্য হিসেবে ধরা হয় তাহলে সেই সাম্রাজ্যের রাজা হলেন আর্নল্ড ড্যানিয়েল পালমার। বিশ্বের সবচেয়ে চমকপ্রদ গলফারদের একজন ছিলেন তিনি। তার গলফের সাম্রাজ্য ছেড়ে ২০১৬ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর পরপারে পারি জমিয়েছেন পালমার।
তবে এখনও প্রতিবছর ৪০ মিলিয়ন ডলার আয় করে যাচ্ছেন এই গলফ কিংবদন্তী। এশিয়াজুড়ে চারশোরও বেশি দোকান এখনও পালমার ব্র্যান্ডের কাপড় বিক্রি করে। ফোর্বসের দেয়া তথ্য অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্রের নামকরা অ্যারিজোনা পানীয় কোম্পানি প্রতিবছর আর্নল্ড পালমারের স্বত্ব ব্যবহার করে প্রায় ৫০০ মিলিয়ন ক্যান বাজারজাত করে।
১. মাইকেল জ্যাকসন
বলুন তো, পপ সঙ্গীতের সম্রাট কাকে বল হয়? কিংবা বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় সঙ্গীত তারকার নাম কী? অথবা সবচেয়ে প্রশংসিত সঙ্গীত শিল্পী কে? সবগুলো প্রশ্নের উত্তর মিলবে একটি নামের মধ্যে। আর সেই নামটি হলো, মাইকেল জোসেফ জ্যাকসন। সঙ্গীত, নাচ এবং ফ্যাশনে তার অবদানসহ তার আলোচিত ব্যক্তিগত জীবন চার দশকেরও বেশি সময় ধরে তাকে একজন বিশ্বজনীন ব্যক্তিত্বে পরিণত করে রেখেছে। এত জশ আর খ্যাতি রেখে ২০০৯ সালের জুনের ২৫ তারিখ ঘুমের মধ্যেই তার শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন মানুষটি।
জীবিত অবস্থায় তো সবচেয়ে বেশি উপার্জন করা তারকাদের তালিকায় শীর্ষে ছিলেনই; মৃত্যুর পরও গত পাঁচ বছর ধরে অবস্থান করছেন মৃত অবস্থায় সবচেয়ে বেশি উপার্জন করা তারকাদের তালিকার শীর্ষে। তার রেখে যাওয়া কাজগুলো আজও তাকে করেছে সমৃদ্ধশালী। পুরনো অ্যালবাম তো আছেই, তার উপর নতুন মুক্তি পাওয়া গানের অ্যালবাম স্ক্রিম, ভেগাসের সেই সার্ক দু সলিল শো এবং ইএমআই সঙ্গীত প্রকাশনা ক্যাটালগ থেকে তার গত বছর আয় হয়েছে ৭৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
তথ্যসূত্র: Forbes; ফিচার ইমেজ: Wallpaper/Sportstle